হাতুড়ির শব্দ, লোহার ঝংকার আর আগুনের আঁচ একসময় ঈদের প্রস্তুতির অপরিহার্য অংশ ছিল এসব। কোরবানির ঈদের আগে কামারপল্লীর ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু এবার সেই দৃশ্য আর দেখা যায়নি সিরাজগঞ্জ শহরের কামারপল্লীগুলোতে। ঈদ কেটে গেলেও ফোটেনি হাসি কামারদের মুখে।
প্রবীণ কামার শিল্পী প্রানেশ কর্মকার বলেন, “এইবার তো লোকজন দোকানে আসেই নাই। আগের মতো কাজ নাই, কাম নাই, টাকা নাই।” ঈদের আগমুহূর্তে যেখানে দোকান চালাতে হিমশিম খাওয়ার কথা, এবার সেখানে সময় কাটাতে হয়েছে খালি বসেই।
কামাররা জানান, বিদেশী দা, ছুরি ও বঁটির বাজার দখলের কারণে দেশীয় পণ্যের চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে লোহার মতো কাঁচামালের দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। তরুণ কামার রুহুল বলেন, “লৌহের দাম বেড়েছে, ক্রেতা কমেছে। লোকসানে গিয়ে ঈদ করলাম।”
ঈদ মৌসুমে কামারদের আয়ের প্রধান সময় হলেও এবার তা হতাশায় পরিণত হয়েছে। অনেকেই ভাবছেন, হয়তো এবার পেশা বদলের কথাও ভাবতে হবে।
স্থানীয়দের মতে এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে এখনই সরকারি সহায়তা, আধুনিক প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা প্রয়োজন। “ঐতিহ্যবাহী কামার শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগ ও বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিও তাদের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তবে হারিয়ে যেতে পারে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কামারশিল্প।
সিরাজগঞ্জ টাইমস/এসএস/সিই