সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স শরিফুল ইসলামকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুমনুল হকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই হাসপাতালের দুই নার্স সালমা খাতুন ও রহিমা খাতুনের বিরুদ্ধেও সহায়তার অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্তঃবিভাগে এই ঘটনা ঘটে। তবে, ঘটনার সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোমিন উদ্দিন হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না বলে জানা গেছে।
সিনিয়র স্টাফ নার্স শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আরএমও ডা. সুমনুল হকের অনুসারী হিসেবে কাজ করতেন সাবেক ইনচার্জ সালমা খাতুন ও রহিমা খাতুন। তারা আরএমও-র সঙ্গে যোগসাজশ করে অনৈতিক সুবিধা ভোগ করতেন। শরিফুল ইসলাম এসব বিষয়ে আপত্তি জানানোর পর থেকেই তিনি তাদের বিরাগভাজন হন।
তিনি আরও জানান, হাসপাতালের একটি পরিত্যক্ত ভবনের কক্ষ সংস্কার করে তিনি পরিবারসহ বসবাস করছিলেন। সম্প্রতি আরএমও-র বদলি আদেশ হওয়ার পর তিনি শরিফুল ইসলামকে কক্ষে ডেকে বিনা ভাড়ায় থাকা নিয়ে আপত্তি জানান এবং ভাড়া পরিশোধের জন্য চাপ দেন। শরিফুল ইসলাম তখন জানান, সবাই যদি ভাড়া দেন, তবে তিনিও দেবেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরএমও তাকে গালিগালাজ করেন।
শরিফুল ইসলামের অভিযোগ, কক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় আরএমও তাকে বাধা দিয়ে মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। পালানোর চেষ্টা করলে নার্স সালমা ও রহিমা তাকে আটকে রাখেন এবং আরএমও তাকে মারধর করেন।
হাসপাতালের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তঃবিভাগ ইনচার্জ রূপালি খাতুন জানান, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, সিনিয়র নার্সই অন্তঃবিভাগের ইনচার্জ হবেন। তবে পূর্বে এই নিয়ম লঙ্ঘন করে আরএমও তার অনুসারী নার্স সালমা ও রহিমাকে ইনচার্জের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। নতুন ইনচার্জ নিয়োগ ও পরিত্যক্ত ভবনের ভাড়া আদায়ের ইস্যুতে আরএমও ক্ষুব্ধ হয়ে শরিফুল ইসলামকে মারধর করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত নার্স সালমা ও রহিমা তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা দাবি করেন, দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হলে তারা সেটি থামানোর চেষ্টা করেছিলেন।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুমনুল হক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শরিফুল ইসলামকে কক্ষের ভাড়া পরিশোধের কথা বলায় তিনি ক্ষিপ্ত হন, তবে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।
জেলা পাবলিক হেলথ নার্স রেখা রানী দে জানান, শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোমিন উদ্দিন জানান, তিনি ঘটনার সময় কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শনে ছিলেন। তবে শনিবার হাসপাতালে গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নুরুল আমীন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ টাইমস/সি/ই