সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে আশঙ্কাজনক হারে পানি বৃদ্ধির অব্যাহত রয়েছে। জেলার কাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে একদিনেই পানি যথাক্রমে ৭৫ ও ৬৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলের মানুষজনের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে কাজীপুর পয়েন্টে পানি সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৮৬ মিটার, যা বিপদসীমা (১৪.৮০ মিটার) থেকে ১.৯৪ মিটার নিচে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৭৫ সেন্টিমিটার।
অন্যদিকে, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.২০ মিটার, যা বিপদসীমা (১২.৯০ মিটার) থেকে ১.৭০ মিটার নিচে। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানেও পানি বেড়েছে ৬৪ সেন্টিমিটার।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, “উজানের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে যমুনার পানি সামান্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে, তবে আগামী কয়েকদিন উজানে আরও বৃষ্টি হলে নিম্নাঞ্চলে সাময়িক প্লাবন দেখা দিতে পারে। আমরা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি।”
এদিকে, নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কাজীপুর, চৌহালী, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কিছু এলাকায় ফসলি জমি ও চরাঞ্চলগুলোতে হালকা পানি ঢুকে পড়েছে।
কাজীপুরের চরগিরিশ ইউনিয়নের কৃষক আলহাজ্ব রশিদ মিয়া বলেন, “গত দুদিনে পানি বেড়ে ধানক্ষেতে ঢুকে পড়েছে। এখন যদি আরও বাড়ে, তবে পাকা ধান ও সবজির ক্ষতি হবে।”
চৌহালীর স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, “প্রতিবার বর্ষার সময় যেভাবে ভাঙন শুরু হয়, এবারও তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।”
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও কৃষি কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
উল্লেখ্য, সাধারণত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকে। তবে সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে এ বছর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা কিছুটা অস্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সিরাজগঞ্জ টাইমস/এসএস/সিই