ওসিকে ঘুষ না দিলে মাছ ধরতে পারেন না চৌহালীর জেলেরা – Sirajganj Times

ওসিকে ঘুষ না দিলে মাছ ধরতে পারেন না চৌহালীর জেলেরা

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীতে মাছ ধরতে হলে ঘুষ দিতে হয় – এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয় জেলেরা। আর এই ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন চৌহালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী মিজানুর রহমান। অভিযোগ অনুযায়ী, সরাসরি কিংবা বিকাশের মাধ্যমে ওসি গাজী মিজানুর রহমান এই ঘুষ গ্রহণ করেন।

এই অভিযোগের পক্ষে দৃশ্যমান প্রমাণও পাওয়া গেছে। সিরাজগঞ্জ টাইমসের হাতে এসেছে এমন একটি ছবি। যেখানে দেখা যায়, স্থানীয় একটি বিকাশ এজেন্টের থেকে খামে ভরা অর্থ গ্রহণ করছেন ওসি মিজানুর।

বিষয়টি আরও নিশ্চিত করতে যখন ওই বিকাশ এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, শুরুতে তিনি এড়িয়ে গেলেও পরে স্বীকার করেন যে, ঘুষের অর্থ খামে ভরে তিনি নিজ হাতে ওসির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

অভিযোগকারীরা জানান, প্রতিটি ‘অবৈধ’ জাল ব্যবহারের জন্য নৌ পুলিশকে মাসোহারা দিতে হয়। একেকটি জালের জন্য দিতে হয় ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই অর্থ না দিলে জাল আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে টাকা দিলে জাল ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জেলে বলেন, “যদি টাকা না দিই, তাহলে আমাদের জাল ফেলে দেয়। আবার টাকা দিলে ওসি সাহেব নিজে ফাঁড়ি থেকে জাল দিয়ে দেন।”

এ বিষয়ে চৌহালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ওসি গাজী মিজানুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

তবে নৌ পুলিশের টাঙ্গাইল অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সোহেল রানা বলেন, “যদি কোনো কর্মকর্তা অনৈতিক কাজে জড়িত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনিয়ম বা দুর্নীতিকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।”

উল্লেখ্য, যমুনা নদীকেন্দ্রিক জীবিকা নির্বাহ করে চৌহালীর প্রায় দুই হাজার পরিবার। কিন্তু ঘুষের এই অপ্রকাশ্য চাপে পড়ে দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা এই জনগোষ্ঠীর জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।