সবার আগে লক্ষ্যসীমা স্পর্শ করতে ছুটছে বাইচের নৌকা। ঢাকের তালে তালে নদীতে তখন দৌড় শুরু। দুপুর থেকেই প্রকৃতির বৈরিতা ভুলে নদীর তীরে মানুষের ঢল। বাদ্যযন্ত্রের শব্দ আর দর্শকদের উল্লাসে উৎসবের আবহে পরিণত হয় বড়াল নদীর বাঘাবাড়ী অংশ।
এমনই প্রাণবন্ত পরিবেশে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে অনুষ্ঠিত হলো ৪৬তম জাতীয় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশ রোয়িং ফাউন্ডেশন ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শনিবার বিকেলে জমজমাট এ প্রতিযোগিতা হয়। জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুবুল আলম।
প্রতিযোগিতায় পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার মোট আটটি পানসী নৌকা অংশ নেয়। চার ধাপের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে শাহজাদপুরের ভিটাপাড়া প্রামাণিক ফাইটার চ্যাম্পিয়ন হয়। আদম ব্রাদার্স দ্বিতীয় এবং রেশমবাড়ীর বাংলার বাঘ তৃতীয় স্থান অর্জন করে। জয়ী দলের সদস্যরা জানান, “এবারের জয় আমাদের গ্রামের জন্য গর্বের। সবাই মিলে আমরা এই জয়ের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি।”
এদিকে নদীর পাড়ে উপস্থিত দর্শকরাও ছিলেন দারুণ উচ্ছ্বসিত। এক দর্শক বলেন, “এমন নৌকা বাইচ দেখতে আমরা প্রতি বছরই আসি। এটা আমাদের গ্রামের উৎসবের মতো।”
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি। প্রথম স্থান অধিকারী দল পেয়েছে এক লাখ টাকা, দ্বিতীয় দল পঁচাত্তর হাজার টাকা এবং তৃতীয় দল পেয়েছে পঞ্চাশ হাজার টাকা ও সম্মাননা স্মারক।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক আমিনুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আরিফ হোসেন এবং বাংলাদেশ রোয়িং ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক। আয়োজকরা জানান, এ ধরনের আয়োজন তরুণ প্রজন্মকে গ্রামীণ খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী করবে এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে তাদের নতুন করে সেতুবন্ধন তৈরি করবে।











