সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা পরিষদের নৌকা মেরামত, প্রিন্টার ও মনিটর সরবরাহ প্রকল্পে ব্যয়ের হিসাব ও বাস্তব কাজের মধ্যে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।
উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির জন্য মোট ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ইঞ্জিনচালিত নৌকা মেরামতের জন্য বরাদ্দ থাকলেও কোনো সংস্কারকাজ হয়নি। নৌকাটি গত জুন মাস থেকে উপজেলার জোতপাড়া ঘাটে অযত্নে পড়ে আছে। এছাড়া নতুন কোনো প্রিন্টার ও মনিটর উপজেলা পরিষদে সরবরাহ করা হয়নি, যদিও প্রকল্পের সম্পূর্ণ অর্থ ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “নৌকা মেরামতের খাতে ৫৫ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি মেশিন কেনা হয়েছে।”
তবে ক্রয় রশিদে দেখা যায়, ডিজেল ইঞ্জিন (১৬ এইচপি, হরাইজন্টাল ৪ স্ট্রোক) কেনা হয়েছে ৮১ হাজার টাকায়, যা ইউএনওর বক্তব্যের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
রশিদ অনুযায়ী, আরও কেনা হয়েছে—এইচপি লেজার জেট প্রো ৪০৪ প্রিন্টার ৫৬ হাজার, নামহীন কালার প্রিন্টার ৩৩ হাজার এবং ২১.৫ ইঞ্চি মনিটর ২২ হাজার টাকায়।
জানা যায়, ইউএনও অফিসের হিসাব সহকারী মো. আশরাফুল ইসলাম প্রকল্পের সভাপতি নির্বাচন করেন ইউএনও মো. মোস্তাফিজুর রহমান, কয়েকজন ইউপি সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে থেকে। পরে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম ব্যাংক চেক নিয়ে প্রকল্পের কাজ ও অর্থ উত্তোলন নিজেরাই সম্পন্ন করেন।
উপজেলা পরিষদ সূত্র জানায়, ইউএনও অফিসের হিসাব সহকারী মো. আশরাফুল ইসলাম ও ইউএনও মো. মোস্তাফিজুর রহমান, কয়েকজন ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেন। পরে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম ব্যাংক চেক নিয়ে প্রকল্পের কাজ ও টাকা তোলার কাজ নিজেরাই করেন।
খাষকাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও প্রকল্প সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “স্যার কাজ করবেন জানতাম, তাই ব্যাংকের চেক দিতে দ্বিধা করিনি। শুনেছি প্রিন্টার ও মনিটর অফিসে আছে।”
অন্যদিকে ইউএনও মো. মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন, “প্রিন্টার ও মনিটর কেনা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিতরণ করা হয়েছে।”
সিরাজগঞ্জ টাইমস/সিই