সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিকে ঘিরে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বুধবার (২৮ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে ছয় মাস মেয়াদি নতুন কমিটি অনুমোদনের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকেন সংগঠনের শীর্ষ স্থানীয়রা।
আগের কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সদর উপজেলা আহ্বায়ক ইয়াসির আরাফাত ইশান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন— “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। জুলাই আন্দোলনে ক্রসফায়ার আতঙ্ক নিয়েও মাঠে ছিলাম। নতুন কমিটির বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। আমাকে সুপার–৫-এ রাখা হলেও আমার অনুমতি নেওয়া হয়নি। এই কমিটিতে থাকার কোনো ইচ্ছা নেই। আজ থেকে সংগঠনের কোনো পদে থাকলাম না।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন— “জেলার উপজেলা কমিটিগুলোর সঙ্গেও কোনো পরামর্শ হয়নি। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।”
সংগঠনের সাবেক সমন্বয়ক ও মুখপাত্র টি.এম. মুশফিক সাদ লেখেন— “জেলার কমিটি নিয়ে আলোচনা হলেও কে কীভাবে থাকবে— তা কখনো বলা হয়নি। এডমিশন নিয়ে ব্যস্ত থাকার সময় হঠাৎ এমন কমিটি ঘোষণার বিষয়টি হাস্যকর। ইন্টার ফেইল নেতা নিয়ে কমিটি হলে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।” তিনি আরও যোগ করেন— “আজ থেকে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম।”
শেখ রিয়াদ ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন— “২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমার নাম কমিটি থেকে না কাটলে বৈষম্যবিরোধী ব্যানারের বিরুদ্ধে মামলা করব। আমার অনুমতি ছাড়া কে নাম দিয়েছে তা জানতে চাই। যারা আন্দোলনে ছিল না, যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে জড়িত বা চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে— তাদের নাম কমিটিতে আসে কীভাবে?” তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন—“উড়ে এসে জুড়ে বসতে দেওয়া হবে না। মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু— ইনকিলাব জিন্দাবাদ।”
অন্যদিকে জুবায়ের আল ইসলাম সেজানও নতুন কমিটিকে “হাস্যকর” বলে মন্তব্য করেছেন। তার অভিযোগ— “অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের দিয়ে নেতৃত্ব গঠন করলে সেটি আন্দোলনকে দুর্বল করবে।”
শুক্রবার কেন্দ্রীয় অনুমোদনপত্র অনুসারে সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটি ২২৩ সদস্য নিয়ে গঠিত হয়। এতে মুন্তাছির মেহেদী হাসান আহ্বায়ক এবং মো. আশিক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হন। মাসুদ রানা সদস্য সচিব এবং ইয়াসির আরাফাত ইশান সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পান কমিটির অনুমোদনে স্বাক্ষর করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ, সাধারণ সম্পাদক হাসব আল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মুইনুল ইসলাম।
কমিটি ঘোষণার পরপরই সংগঠনের স্থানীয় বিভিন্ন ইউনিটে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত পোস্টগুলোতে পরামর্শ ছাড়াই কমিটি করা, অনভিজ্ঞ বা বিতর্কিত ব্যক্তিকে পদ দেওয়া এবং সাংগঠনিক নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ উঠে এসেছে।
সিরাজগঞ্জ টাইমস/সিই











